fbpx

ফেনী নদী তীরের ‘মৈষা দই’

ফেনী: আঞ্চলিক ভাষায় ‘মৈষা দই’ বলা হয় মহিষের দুধের থেকে তৈরি দইকে। মহিষা দইয়ের কথা শুনলে আমাদের চোখের সামনে যেমন মাটির পাত্রের চিত্র ভেসে উঠে এখানকার চিত্র ঠিক তেমন নয়।

মৈষা দই বা মহিষের দই

উপকূলীয় এলাকা ভোলা, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর উপকুলীয় এলাকার মহিষের দই থেকে এখানকার দইয়ের স্বাদেও আছে কিছুটা ব্যতিক্রম। উপকূলীয় অন্যান্য এলাকায় টক দই হলেও এখানকার দই হয় মিষ্টি।

অন্য এলাকার মহিষা দই তুলনামূলক গাঢ় হলেও এখানকার দই কিছুটা কম গাঢ়। আর সে কারণেই সহকর্মী এটিএন নিউজের দিদারুল আলম মুহুরী প্রজেক্ট এলাকার দোকানি মাসুদকে বলছিলেন- এসব মহিষের খাঁটি দইতো? নাকি ভেজাল আছে?

দোকানি মাসুদ স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন কোন ভেজাল নাই। প্রতিদিন সকালে বাথান থেকে মাহুতরা মহিষের দুধ নিয়ে আসে সেখান থেকে তৈরি হয় দই। দুধের সঙ্গে প্রয়োজন মত মেশানো হয় চিনি। এছাড়া আর কোন কিছুই মেশানো হয় না।

মাসুদ জানালেন মহিষের দুধ যখন হাঁড়িতে ঢালা হয় তখন খুব সহজেই জমাট বাধতে শুরু করে ফলে একদিনের ভেতরেই তৈরি হয়ে যায় দই। অতিরিক্ত কিছু মেশাতেও হয় না।

মাসুদ আরও জানান, তারা প্রতিকেজি দুধ কিনে নেন ১শ টাকা করে। দই তৈরি করে বিক্রি করেন ২শ থেকে ২২০ টাকা। ছোট কাচের গ্লাসের প্রতিটি বিক্রি করেন ৩০ টাকা। কেউ চাইলে মাটির হাঁড়িতেও দই বসিয়ে দেওয়া হয়। কোন অনুষ্ঠানের জন্য কেউ অর্ডার করলে বেশি পরিমাণে বানানো হয় এবং অর্ডারকারির বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।

স্থানীয় একটি স্কুলের শিক্ষক শেখ আবদুল হান্নান বলেন, সোনাগাজী উপকূলীয় এলাকার দই সাধারণত খাঁটি, এখানে কোনো ধরনের ভেজাল মেশানো হয় না। যদি কেউ করে থাকেন তাহলে হয়তো মহিষের সঙ্গে গরুর দুধ মেশাতে পারেন। তবে, মুহুরী প্রজেক্ট এলাকার দইয়ের চাইতে ওলামা বাজার এলাকার দই গুণে মানে ভালো। এছাড়াও উপজেলার ভোরবাজার, কারামতিয়া বাজারে মহিষের দই তৈরি করা হয়।

সোনাগাজী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, সোনাগাজী একটি উপকূলীয় জনপদ। এখানে নদী তীরবর্তী অনেক চর আছে। এখানে উন্নত মানের উরি (ঘাস) সেগুলো খেয়ে এখানে প্রচুর গরু-মহিষ ও ভেড়া লালন পালন হয়। সেসব মহিষের দুধ থেকেই নির্ভেজাল দই তৈরি হয়।

তিনি বলেন, মহিষের দই হজমে সহায়তা করে। এর ল্যাকটোবেসিলিসের মতো উপকারী ব্যাকটেরিয়া, যেগুলো প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া নামে পরিচিত, তারা শরীরের জন্য ভিটামিন কে তৈরি করে ও পেটের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বিতাড়িত করে। প্রতিদিন মহিষের দই খেলে হৃদরোগ প্রতিরোধ হবে।

সোনাগাজী উপকূলীয় কিছু এলাকায় মহিষের দুধের কাঁচা দইও তৈরি হয়। এ টক দই গুড়, মিষ্টি অথবা চিনি দিয়ে খাওয়া হয়। এছাড়া মুড়ি, চিড়া ও খৈ দিয়েও খাওয়া যায়। সামাজিক, পারিবারিক ও ঘরোয়া ভোজেও থাকে এ দই।

 

সোলায়মান হাজারী ডালিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

***ফেনী অনলাইন সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।***

FeniOnline.net Telegram Channel@FeniOnline

Comments

DMCA.com Protection Status
Bidvertiser2074653
error: Something went wrong !!