fbpx

একদিনে ফেনী ভ্রমণের আদ্যপ্রান্ত (দ্বিতীয় পর্ব)

লেখাঃ আহমাদ ইশতিয়াক: এই ভ্রমণে যা দেখবেন হাজার বছরের প্রাচীন আর্য সভ্যতার শিল পাথর ও শিলা মূর্তি, বাংলাদেশের একমাত্র সাত মঠ, ৭০০ বছরের প্রাচীন রাজনন্দিনীর দীঘি, বাংলাদেশের প্রাচীনতম এক বিদ্যালয়, সেন রাজা বিজয় সেনের বিজয় সিংহ দিঘি, ভাটির বাঘ শমসের গাজীর দিঘি, বাঁশপাড়া জমিদার বাড়ি, মোঘল স্থাপত্যকলার অপূর্ব নিদর্শন চাঁদগাজী মসজিদ।

এবার একটু যাই এক প্রাচীন মসজিদে।

চাঁদগাজী জামে মসজিদ 

চাঁদগাজী জামে মসজিদ বাংলাদেশের অন্যতম মোঘল আমলের অনিন্দ্য সুন্দর প্রাচীন এক স্থাপনা। মসজিদের এক সারিতে তিনটি গম্বুজ অবস্থিত যার মধ্যে মাঝখানের গম্বুজটির আকার তুলনায় বড়। মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে গম্বুজের উপরে পাতা এবং কলসের নয়নাভিরাম নকশা করা হয়েছে। এছাড়া একই ধরনের স্থাপত্যশৈলীর ১২ টি মিনার রয়েছে এবং দরজার উপরে টেরাকোটার নকশা রয়েছে। মসজিদের সামনের অংশে শ্বেত পাথরের নামফলকে এর বর্ণনা রয়েছে।
হিজরি ১১১২ সালে চাঁদ গাজী ভূঁইয়া ২৮ শতক জমির ওপর এ মসজিদটি নির্মাণ করেন।
মসজিদটি ছাগলনাইয়ার চাঁদগাজী বাজারের পাশে অবস্থিত। ছাগলনাইয়া বাজারেই সিএনজি পাবেন।
ফিরে আসুন ছাগলনাইয়া বাজারে। সোনাপুরের সিএনজিতে উঠে পড়ুন।

চাঁদগাজী জামে মসজিদ । বাংলা উইকিপিডিয়া
চাঁদগাজী জামে মসজিদ । বাংলা উইকিপিডিয়া

ভাটির বাঘ শমসের গাজীর দিঘি

দিঘির একপাড়ে ভারত, অন্যপাশে বাংলাদেশের শেষ সীমানা! তারপর নো ম্যানস ল্যান্ড। নো ম্যানস ল্যান্ডেই পড়েছে শমসের গাজীর দিঘি। যদিও দিঘিতে নামতে আপত্তি নেই। ভাটির বাঘ শমসের গাজী ছিলেন কিংবদন্তি ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী ও ত্রিপুরার শেষ স্বাধীন নবাব নবাব সিরাজুদ্দৌলার পর পর তিনিই ঔপনিবেশিক শক্তির হাতে প্রথম নিহত হন। অপূর্ব এই দিঘির সম্মুখে ভারতের সীমান্ত, পিছনে শমসের গাজীর দিঘির পাড়ে প্রাকৃতিক নৈসর্গিক ফলজ গাছের উদ্যান।
টিকেট মাত্র ৫ টাকা। এবার চলুন যাই শমসের গাজীর খনন করা আরেক দিঘিতে।

কৈয়ারা দিঘি

ভাটির বাঘ শমসের গাজীর মা কৈয়ারা বিবি। জনসাধারণের পানীয় জলের সুবিধার্থ শমসের গাজী মা কৈয়ারা বিবির নামে কৈয়ারা দীঘি খনন করেন। কৈয়ারা গ্রাম ও তাঁর স্মৃতিই বহন করছে। এই বিশাল দিঘি নির্মল ও সুস্বাদু পানির জন্য বিখ্যাত।
কৈয়ারা দিঘিকে নিয়ে নানা অলৌকিক কাহিনী প্রচলিত আছে।

যেমন
“দীঘির মধ্যে জগন্নাথ
পাড়ের মধ্যে বীরসিংহ
পানির মধ্যে কৈয়ারা হাটের মধ্যে লেমুয়া
ঘাটের মধ্যে পানুয়া।”

কৈয়ারা দীঘি - ফেনী | Tourist Places or Spot in Bangladesh
কৈয়ারা দীঘি – ফেনী | Tourist Places or Spot in Bangladesh

আসার সময় এবার চলুন ফেনী সর্বপ্রাচীন প্রত্নতাত্বিক নিদর্শনে।

শিলুয়ার শিল পাথর ও শিলা মূর্তি

শিলা পাথরের গায়ে খৃষ্টপূর্ব দ্বিতীয় অব্দে প্রচলিত ব্রাক্ষ্মী লিপির চিহ্ন পাওয়া গেছে। এর থেকে এখানে শিকারী আর্য জাতির পদাচরণের প্রমাণ পাওয়া যায় এবং ধারণা করা হয় তৎকালীন সময়ে এখানে মানুষের বসবাস ছিল।
প্রাচীন শিলামূর্তির ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারের কারণে এই স্থানটি সে সময় থেকেই শিলুয়া বা শিল্লা নামে পরিচিত লাভ করে। প্রাচীন কালে এই স্থানে বৌদ্ধ ধর্ম
ও কৃষ্টির বিকাশ ঘটেছিল বলে ধারণা করা হয়।
ছাগলনাইয়ার শিলুয়া গ্রামে এই শিলুয়ার শিল পাথর ও শিলা মূর্তি অবস্থিত। ছাগলনাইয়া বাজার থেকে শিলুয়ার সিএনজি পাবেন।

শিলুয়ার শিল পাথর । feni.gov.bd
শিলুয়ার শিল পাথর । feni.gov.bd

যেভাবে যাবেন- ঢাকা থেকে ট্রেনে ও বাসে ফেনী যাওয়া যায়।
ট্রেনে যেতে চাইলে চট্টগ্রামগামী রাতের শেষ ট্রেন তূর্ণা নিশিথায় চলে যান। রাত সাড়ে ১১টায় কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া তূর্ণা নিশিথায় ফেনী পৌঁছে সাড়ে চারটায়! ভাড়া ২৬৫ টাকা। আবার কম খরচে চট্টগ্রাম মেইলের যেতে পারেন। ভাড়া পড়বে মাত্র ৯০ টাকা। চট্টগ্রাম মেইল কমলাপুর থেকে ছাড়ে রাত সাড়ে দশটায়। সাত ঘন্টা লাগবে ফেনী পৌঁছাতে।

বাসে এনা ট্রান্সপোর্টে ও স্টার লাইনে যেতে পারেন। ভাড়া ২৭০ টাকা।

বি:দ্র:- প্রকৃতি ও পুরাকীর্তি আমাদের সম্পদ। দয়া করে পুরাকীর্তির গায়ে আঘাত করবেন না, প্রকৃতিতে যত্রতত্র অপচনশীল ময়লা ফেলবেন না।

একদিনে ফেনী ভ্রমণের আদ্যপ্রান্ত (প্রথম পর্ব)
একদিনে ফেনী ভ্রমণের আদ্যপ্রান্ত (দ্বিতীয় পর্ব)
একদিনে ফেনী ভ্রমণের আদ্যপ্রান্ত (তৃতীয় পর্ব)
একদিনে ফেনী ভ্রমণের আদ্যপান্ত (চতুর্থ পর্ব)

অনুভ্রমণ থেকে সংগৃহীত

***ফেনী অনলাইন সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।***

FeniOnline.net Telegram Channel@FeniOnline

Comments

DMCA.com Protection Status
Bidvertiser2074653
error: Something went wrong !!