লেখাঃ আহমাদ ইশতিয়াক: এই ভ্রমণে যা দেখবেন হাজার বছরের প্রাচীন আর্য সভ্যতার শিল পাথর ও শিলা মূর্তি, বাংলাদেশের একমাত্র সাত মঠ, ৭০০ বছরের প্রাচীন রাজনন্দিনীর দীঘি, বাংলাদেশের প্রাচীনতম এক বিদ্যালয়, সেন রাজা বিজয় সেনের বিজয় সিংহ দিঘি, ভাটির বাঘ শমসের গাজীর দিঘি, বাঁশপাড়া জমিদার বাড়ি, মোঘল স্থাপত্যকলার অপূর্ব নিদর্শন চাঁদগাজী মসজিদ।
বিজয় সিংহ দিঘি
বাংলার বিখ্যাত সেন বংশের প্রতিষ্ঠাতা বিজয় সেনের অমর কীর্তি ফেনীর বিজয় সিংহ দীঘি । এ দিঘির অবস্থান ফেনী শহরের প্রায় ২ কিলোমিটার পশ্চিমে ফেনী সার্কিট হাউজের পাড়ে। এ দীঘির আয়তন ৩৭.৫৭ একর। অত্যন্ত মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থিত এ দিঘীর সব পাড় উঁচু ও বৃক্ষ শোভিত। ফেনী শহর থেকে শহর বাস সার্ভিস কিংবা সিএনজিতে যেতে পাবেন।
রাজা ঝির দিঘি বা রাজনন্দিনীর দীঘি
ত্রিপুরা মহারাজের প্রভাবশালী একজন রাজার তার কন্যার অন্ধত্ব দুর করার মানসে প্রায় ৭০০ বছর পূর্বে রাজাঝির দিঘি রাজনন্দিনীর দিঘি খনন করা হয় বলে। ১৮৭৫ সালে ফেনী মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হলে তার সদর দপ্তর গড়ে তোলা হয় এই রাজাঝির দিঘির পাড়ে । এটি ফেনী শহরের মধ্যে অবস্থিত।
ফেনী পাইলট হাইস্কুল
ফেনী সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীনতম বিদ্যালয়।
নোয়াখালী অঞ্চলের মধ্যে ফেনী পাইলট হাইস্কুল সর্বপ্রথম হাইস্কুল। ১৮৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্কুল ফেনী শহরেই অবস্থিত। কিংবদন্তি মহাকবি নবীনচন্দ্র সেনের হাতেই এই বিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে। মহাকবি নবীনচন্দ্র সেন ছিলেন ফেনীর তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক।
রাজাঝির দিঘির পাড়েই এই স্কুল।
এবার ফেনী শহর থেকে চলে আসুন ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলায়। পাইলট স্কুল থেকে একটু সামনে এগোলেই ছাগলনাইয়ার সিএনজি পাবেন।
সাত মঠ
ছাগলনাইয়ার তৎকালীন হিন্দু জমিদার বিনোদ বিহারীর বাড়িটি আট একর জায়গাজুড়ে নির্মিত। বর্তমানে এটি উপজেলা শহরের বাঁশপাড়ায় এর অবস্থান। বাড়ির পাশে রয়েছে সাতটি চিতা মন্দির।
সাত মন্দির বাড়ি, সাত মঠ হিসেবে পরিচিত পেয়েছে।
প্রতিটি মন্দিরের গায়ে অপূর্ব দৃষ্টিনন্দন কারুকার্যময় । প্রতিটি মন্দিরের চূড়া একটি অন্যটির থেকে ভিন্ন!
১৯৪৮ সালের দিকে জমিদার বিনোদ বিহারি কলকাতা চলে যান। বাড়িটি রেখেই তিনি চলে যান।
বাংলাদেশের আর কোথাও একসঙ্গে এতো অধিক সংখ্যক মন্দির নেই। পাশেই রয়েছে ছাগলনাইয়ার তৎকালীন বাঁশপাড়া জমিদার বাড়ি।
জগন্নাথ মন্দির
১৭৫৮ সালে ভাটির বাঘ শমসের গাজী তাঁর পালিত জগন্নাথ সেনের নামে জগন্নাথ মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দিরটি ছাগলনাইয়া পৌরসভাতেই।
যেভাবে যাবেন-
ঢাকা থেকে ট্রেনে ও বাসে ফেনী যাওয়া যায়।
ট্রেনে যেতে চাইলে চট্টগ্রামগামী রাতের শেষ ট্রেন তূর্ণা নিশিথায় চলে যান। রাত সাড়ে ১১টায় কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া তূর্ণা নিশিথায় ফেনী পৌঁছে সাড়ে চারটায়! ভাড়া ২৬৫ টাকা। আবার কম খরচে চট্টগ্রাম মেইলের যেতে পারেন। ভাড়া পড়বে মাত্র ৯০ টাকা। চট্টগ্রাম মেইল কমলাপুর থেকে ছাড়ে রাত সাড়ে দশটায়। সাত ঘন্টা লাগবে ফেনী পৌঁছাতে।
বাসে এনা ট্রান্সপোর্টে ও স্টার লাইনে যেতে পারেন। ভাড়া ২৭০ টাকা।
বি:দ্র:- প্রকৃতি ও পুরাকীর্তি আমাদের সম্পদ। দয়া করে পুরাকীর্তির গায়ে আঘাত করবেন না, প্রকৃতিতে যত্রতত্র অপচনশীল ময়লা ফেলবেন না। আপনি যেমন সৌন্দর্য উপভোগ করছেন, আপনার পরবর্তী প্রজন্ম যেন অধিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে।
একদিনে ফেনী ভ্রমণের আদ্যপ্রান্ত (প্রথম পর্ব)
একদিনে ফেনী ভ্রমণের আদ্যপ্রান্ত (দ্বিতীয় পর্ব)
একদিনে ফেনী ভ্রমণের আদ্যপ্রান্ত (তৃতীয় পর্ব)
একদিনে ফেনী ভ্রমণের আদ্যপান্ত (চতুর্থ পর্ব)
অনুভ্রমণ থেকে সংগৃহীত
***ফেনী অনলাইন সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।***
@FeniOnline
Comments