ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামে দেবী নয় আছে স্থাপত্যে বিটিশ জামে মসজিদ। দেশের সব চেয়ে ছোট গ্রামের নাম দেবীপুর, বৃটিশ আমলে ও ১৯৪৭ সালের পূর্বভর্তি বৃটিশ বিতাড়িত হয়ে পাকিস্তান-ভারত পরে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পরেও সিমান্ত রেখায় বসবাস কারীদের মাঝে এটি প্রাণের মসজিদ ছিলো তাদের ইবাদতের কেন্দ্রবিন্দু। বর্তমানে মসজিদের আশ পাশের ৪০০ মিটারের মধ্যে কোন বসতী নেই কারন মসজিদটি ভারত ও বাংলাদেশের সিমান্ত রেখায় অবস্থান করছে,মসজিদে সামনে মাঠটি ঈদগা হিসাবে ব্যবহার করছেন মুসল্লিরা।
নোম্যান্সল্যান্ডের সিমানা পিলারের বাংলাদেশের অবস্থানে মসজিদটি দাড়ীয়ে আছে প্রায় দেড়শত বছর দরে,অত্রগ্রামের বয়োবৃদ্ধদের বাপদাদার ঐতিহ্য ও ইবাদতের একমাত্র মসজিদ,মসজিদটি দেখতে দোতলা বিশিষ্ট মনে হলেও আসলে এটি একতলা।
এখানে নেই বিদ্যুৎ,নেই টয়লেট, নেই আজানের মাইক,নেই পাখা,নেই মোবাইল নেটওয়ার্ক,নেই কোন সরকারি অর্থ বরাদ্দ,মসজিদের নামে ভূমি সম্পদ থাকলেও দক্ষ মসজিদ পরিচালনা কমিটির অভাবে মসজিদটি প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম,পুরো গ্রামে ছিলোনা কোন বিদ্যালয় বর্তমান সরকার প্রথম বারের মতো একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করায় গ্রামবাসী খুশি হলেও পাকা সড়ক না থাকায় টালমাটাল,কিছুদিন পূর্বে কুয়েত সংস্থার মাধ্যমে (বিদ্যুৎতায়ীত) গ্রামের পশ্চিম অংশে একটি মসজিদ নির্মাণ হওয়ায় বৃটিশ মসজিদের মসল্লিদের মধ্যে অংশ বিশেষ ভাগ হয়ে যায়,এই বৃটিশ মসজিদের বিভিন্ন বিষয় খোঁজ খবর পেয়ে অনেক সরকারি কর্মকর্তা এটি পরিদর্শন করে গেলেও সংষ্কারের জন্য বা মসজিদের ফান্ডের জন্য আজ অবধি কোন কর্মকর্তা চুনি পয়সার বরাদ্ধ দিতে পারেনি।
বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কিসিঞ্জার চাকমা একাধিক বার পরিদর্শন করলেও তিনি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে ফুলগাজী উপজেলা থেকে বিদায় নিয়ছিলেন,২০১৯ সালের শুরুতে সিমান্ত পরিদর্শন আসেন ফেনী জেলার বর্ডারগার্ড অফিসার (সিও)। তিনি মসজিদের অবস্থান ও স্থাপত্য শৈলী দেখে এটিকে সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং দ্রুত সংষ্কার করলে মসজিদটি রুপলাবন্য সৌন্দর্য ফুটে ওঠে। এলাকার বাসিন্দারা মসজিদটি সংস্কার হওয়ায় আনন্দের জোয়ারে বাসছে।
মসজিদের বয়োবৃদ্ধ কয়েকজন মুসল্লিদের সাথে আলাপ করে জানা যায় বৃটিশ সরকার আমলে কোন এক ধার্মিক মুসলিম শাসক ভ্রমনে এসে ইবাদত করতে মসজিদটি নির্মাণ করেন, তারা বলেন গ্রামের মধ্যে মুসলিম বেদীত ভিন্নধর্মালম্বী নেই,ভারত সরকার সিমান্তে কাটাতারের বেড়া নির্মাণের সময় মসজিদ সংলগ্ন কিছু (ভারতীয় মুসলিম) ভারতীয়দের তাদের সিমানার ভিতরে নিয়ে যাওয়ার কারনে ও কুয়েত সংস্থার মাধ্যমে গ্রামের পশ্চিম অংশের (বিদ্যুৎতায়ীত) নতুন মসজিদ নির্মাণ হওয়ায় করনে মুসল্লিদের সংখ্যা কমছে তবে এখনো বয়োবৃদ্ধরা বাপদাদার অবস্থান ধরে রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
মসজিদের তরুন এক মুসল্লি জয়নাল আবদীন বলেন মসজিদটি দেখতে কষ্ট করে দুর দুরান্ত থেকে অনেকে আসেন এবং সংষ্কার হওয়ার কারনে মসজিদটি ফেনী জেলার স্থাপত্য শৈলীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলে মসজিদ ও মসজিদের আশপাশ ভ্রমণবিলাসীদের জন্য একটি পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে উৎতে পারে।
মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মোঃ হাবিবুল্লাহ বলেন মসজিদের ভিতরে দেওয়ালে আর্বিতে সুরা কেরাত লেখা থাকলেও মসজিদটি নির্মানের সঠিক কোন সন তারিখ খুঁজে পাওয়া যায় নাই, মসজিদটির সামনে গ্রামবাসীর একমাত্র ঈদগা আর এই ঈদগায় গ্রামের সবাই ঈদের জামাতে আমরা মিলিত হই আর মসজিদের ঈদগার পাশে টিউবওয়েল,পুকুর ও গ্রামবাসীর কবরস্থানের অবস্থান আজ অবধি সরকারের কোন প্রকার বরাদ্ধের মুখ দেখিনি। মসজিদের উপরের অংশে টিন ও চাহনি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করা হতো এবং হচ্ছে আর মসজিদের চতুর পাশ মোটা দেওয়ালে আবরিত।
Comments