ফেনীর মাওলানা সৈয়দ ওয়ায়েজ উদ্দিন ছিলেন বহুগুণের অধিকারী। ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষাও গ্রহণ করেছেন তিনি। বামপন্থী রাজনীতি করতেন। তুখোড় বক্তা ছিলেন। নেতৃত্ব দিয়েছেন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে। সাংবাদিকতা করতেন। আর দেশকে শত্রুমুক্ত করতে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে অংশ নিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে। রাজাকাররা তাঁকে তুলে নিয়ে হত্যা করে।
শহীদ মাওলানা ওয়ায়েজ উদ্দিন ১৯৪৩ সালে ফেনীর বিখ্যাত পীরে কামেল হজরত পাগলা মিয়ার তাকিয়া বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা সৈয়দ অলি আহমেদ, মা ফাতেমা খাতুন। ফেনীর আলিয়া মাদ্রাসা থেকে তিনি ‘জামায়াতে উলা’ পাস করেন। পাশাপাশি ফেনী কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি নেন। ওই সময় ফেনীসহ বৃহত্তর নোয়াখালীতে তিনি বেশ জনপ্রিয় বামপন্থী ছাত্রনেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ১৯৬৭-৬৮ সালে ফেনী কলেজ ছাত্র মজলিশের (ছাত্রসংসদ) নির্বাচিত সহসভাপতি ছিলেন। রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও নোয়াখালী জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। বাষট্টিতে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনবিরোধী আন্দোলন, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পদে ফাতেমা জিন্নার নির্বাচনী প্রচারণায় ও উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের সময় ছাত্র আন্দোলনে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। জাতীয় রাজনীতিতে তিনি মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর অনুসারী ছিলেন।
সৈয়দ ওয়ায়েজ উদ্দিনের স্ত্রী হোসনে আরা বেগম স্বাধীনতার পর স্কুলশিক্ষক ছিলেন, এখন অবসরে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি গর্ভবতী ছিলেন। তাঁদের একমাত্র মেয়ে সৈয়দা ওয়াসিমা পারভীনের বিয়ে হয়েছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বাবাকে কোনো দিন চোখে দেখার সুযোগ হয়নি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য তাঁর বাবা জীবন দিলেও তাঁর কোনো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নেই।
গ্রন্থনা: আবু তাহের, ফেনী।
সুত্র: প্রথম আলো
Comments