বাংলার ইতিহাসে শমশের গাজী একটি নাম, একটি কিংবদন্তিতুল্য বিরল চরিত্র। তাকে কেউ বলেন মহান দেশপ্রেমিক, প্রজাবৎসল, কৃষক আন্দোলনের নেতা, প্রতিবাদের প্রতীক। আবার কেউ বলেন বেঈমান, অত্যাচারী ও ডাকাত। রহস্যঘেরা চরিত্রের এই মানুষটিকে নিয়ে খুব অল্পই ইতিহাসে আলোচনা হয়েছে বলে আমাদের অনেকের কাছে তার চরিত্র অজানা এবং স্ববিরোধিতাপূর্ণ। তবে এটা স্বীকার করতে হয় যে শমশের গাজী অতি সাধারণ মানুষের কাতার থেকে নিজের মেধা, যোগ্যতা, চতুরতা, আর পরাক্রমশীলতা দিয়ে বাংলার পুবাঞ্চলের বিশাল এলাকায় নিজকে ক্ষমতার ঈর্ষনীয় শীর্ষে নিয়ে গিয়েছিলেন।
শমশের গাজীর জন্ম ১৭০৫ সালে(মতভেদসহ) বর্তমান ফেনীর কঞ্জুরা গ্রামে। কঞ্জুরা গ্রামের পেয়ার মোহাম্মদ তার পিতা আর কৈয়ারা বিবি তার মাতা। জন্মের পর তার নাম রাখা হয়েছিল শমশের আলী। দক্ষিণ সিকের জমিদারি দখলের পর আবার অনেকের মতে ত্রিপুরা রাজ্য জয়ের পর তিনি গাজী উপাধি ধারণ করেন।
শমশের গাজীর পিতা পিয়ার মোহাম্মদ দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত হয়ে নিজের গ্রাম ওমরাবাদ ত্যাগ করে বাঁচার তাগিদে চলে আসেন সপরিবারে কঞ্জুরা গ্রামে (বর্তমান ছাগলনাইয়া থানায়)। তথাকার জমিদার নাসির মোহাম্মদ চৌধুরী তাকে আশ্রয় দান করেন। শিশুকাল থেকেই জমিদার নাসির মোহাম্মদ চৌধুরী শমশের আলীকে স্নেহ করতেন। শমশের আলীকে গ্রামের মক্তবে ভর্তি করে দেন তিনি। সেখানে শমশের আলী বাংলার সাথে সাথে আরবি, উর্দু, ফারসি ভাষা শিক্ষা লাভ করেন। লেখাপড়ার সাথে সাথে তিনি অস্ত্র চালনাতেও দক্ষতা অর্জন করেন।
শমশের আলীর সাহস ও সামরিক দক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে জমিদার তাকে বিখ্যাত পানুয়াঘাটের অধ্যক্ষ হিসাবে নিয়োগ দান করেন। আর এই নিয়োগের মাধ্যমে শমশের আলীর জীবনের মোড় ঘুরে যায়। পানুয়াঘাট স্থানটি ছাগলনাইয়ায় এবং মুহুরী নদীর তীরে অবস্থিত। সেখানে তখন প্রায় পাঁচ শত চোর, ডাকাত ও জলদস্যুর একটি শক্তিশালী বাহিনী ছিল যারা নিয়মিত এলাকায় অপহরণ, হত্যা, লুটতরাজ চালিয়ে যেত নির্বিঘ্নে। তাদের অত্যাচারে সেখানকার মানুষ জর্জরিত ছিল। শমশের আলী পানুয়াঘাটের অধ্যক্ষ পদে নিয়োজিত হলে ডাকাতেরা ভীত হয়ে পড়ে।
তারা সমবেত ভাবে শমশের আলীর সাথে যোগাযোগ করে।তারা অঙ্গীকার করে যে তারা সেখানে কোন ডাকাতি করবে না। তারা ডাকাতি করবে সে এলাকার বাইরে তবে ডাকাতি থেকে অর্জিত সম্পদের অর্ধেক দিবে শমশের আলীকে। ডাকাতরা আরও কথা দেয় যখন তার(শমশের আলীর) প্রয়োজন হবে তখন তারা নিজেদের জীবনের বিনিময়ে হলেও তাকে সহায়তা করবে। ৫০০ ডাকাতের সহায়তায় ও শক্তিতে শমশের আলী শক্তিশালী হয়ে অনেক লড়াইয়ে সাফল্য লাভ করেন। ৩০ বছরের যুবক শমশের আলী আরও উন্নতির স্বপ্ন দেখতে আরম্ভ করেন। এক সময়ে তিনি জমিদার নাসির মোহাম্মদ চৌধুরীর সুন্দরী কন্যা দৈয়া বিবিকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়ে বসেন। এতে জমিদার শমশের আলী দ্বারা অপমানিত বোধ করে তার প্রতি প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হন। তিনি শমশের আলীকে পানুয়াঘাট কিল্লা প্রধানের পদ থেকে বরখাস্ত করেন এবং তাকে ধরে আনার জন্য একদল সৈন্য প্রেরণ করেন। শমশের আলীর সহযোগী ছিল তার চাচাত ভাই ছাদু পাহলোয়ান। শমশের আলী ও ছাদু পাহলোয়ানের সাহসিকতায় জমিদারের বাহিনী পরাজিত হয়।
পুনরায় বড় ধরনের হামলার আশঙ্কায় শমশের আলী পার্শ্ববর্তী বেদরাবাদ এলাকায় পালিয়ে যান।শমশের আলীর সহযোদ্ধা ও চাচাত ভাই ছাদু পাহলোয়ানের হাতে এক দুঃখজনক ঘটনায়(শমশের আলীর অনুমোদন বিহীন এক আক্রমণে) পিতার আশ্রয় দাতা জমিদার নাসির মোহাম্মদ চৌধুরী নিহত হন। দুঃখজনক ঘটনায় ছাদু পাহলোয়ানের উপর শমশের আলী ক্ষুব্ধ হন। এই ঘটনার পরে জমিদার নাসির মোহাম্মদ চৌধুরীর ছেলেদের সাথে শমশের আলী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। যুদ্ধে জমিদারের দুই ছেলেকে হত্যা করে শমশের আালী জমিদারির দখল নিয়ে নেন। পানুয়াঘাটের ৫০০ ডাকাত এই যুদ্ধে শমশের আলীর পক্ষে অংশ গ্রহণ করেছিল। তারা শমশের আলীর সাথে মিলে জমিদার বাড়ি লুণ্ঠন করে।
শমশের গাজী দূরদৃষ্টি সম্পন্ন মানুষ ছিলেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন জমিদারি দখলের পরে ত্রিপুরার রাজার সাথে তার লড়াই অত্যাসন্ন। তিনি জমিদারি দখলের পর প্রজাদের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করায় মনোনিবেশ করেন। তিনি প্রজাদের আস্থা অর্জন করেন।বিপদে প্রজারা তার সাথে থাকার অঙ্গীকার করে।
শমশের গাজী জমিদারি এলাকার ছাগলনাইয়া কেল্লায় একটি বিশাল ভবন নির্মাণ করেন। জমিদার বাড়ির চারদিকে ৫০ গজ পাশ একটি পরিখা খনন করে পাহারায় সশস্ত্র প্রহরী নিযুক্ত করেন। যুদ্ধের জন্য বহু অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহ করেন।
এদিকে নাসির মোহাম্মদ চৌধুরীর জমিদারির অংশীদার রতন চৌধুরী ত্রিপুরার মহারাজার নিকট শমশের গাজী কর্তৃক জমিদারি দখলের বিরুদ্ধে নালিশ করেন।
ত্রিপুরার মহারাজা এই খবর পেয়ে খুবই ক্ষুব্ধ হন এবং উজির জয়দেব ও সেনাপতি লুচি দর্পনারায়ণকে তিন হাজার সৈন্যসহ দক্ষিণে ছাগলনাইয়া কেল্লায় অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন।
অসম যুদ্ধ এড়িয়ে শমশের গাজী ত্রিপুরার উজির জয়দেবকে কৌশলে বন্দি করে ফেলেন। উজিরের বন্দি হওয়ার খবর পেয়ে সেনাপতি ছাগলনাইয়া কেল্লা থেকে পালিয়ে যান। উজিরের সাথে ১৫ দিন ভাল আচরণ করে শমশের গাজী তার মন জয় করে ফেলেন। জমিদারি তার নামে লিখে দেওয়ার বিনিময়ে উজিরকে হাজার মুদ্রা উপহার দেওয়ার প্রস্তাব করেন। উজির তাতে সম্মত হন। দক্ষিণ সিকের জমিদারি এভাবে শমশের গাজী ত্রিপুরার উজিরের মাধ্যমে বন্দোবস্ত নিয়ে নেন। শমশের গাজী্ রাজ দরবারের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করেন। তিনি মেহেরকুল পরগণার অর্থাৎ শহর কুমিল্লা ও তৎসংলগ্ন অঞ্চলের জমিদারিও নিজ আয়ত্বে নিয়ে নেন(কুমিল্লার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি-আহসানুল কবীর)। শমশের গাজীর জমিদারির আরও বিস্তৃত হতে থাকে।
শমশের গাজীর স্বপ্ন ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে। তিনি একদিকে ত্রিপুরা রাজদরবারের সাথে সখ্যতা বজায় রাখেন আবার তলে তলে সৈন্যসামন্ত বাড়াতে থাকেন। প্রতি তিন বছরে দশ হাজার মুদ্রা ত্রিপুরার রাজার নিকট খাজনা দেওয়ার কথা।নানা অজুহাতে তিনি তা পরিশোধ করেননি। তিন বছর পর আবার খাজনা পরিশোধের সময় এলেও তিনি তা আর পরিশোধ করেননি। ফলে ত্রিপুরার রাজার সাথে অবাধ্যতার জন্য শমশের গাজীর সংঘর্ষ অবধারিত হয়ে উঠে।
এদিকে ত্রিপুরা রাজপরিবার অভ্যন্তরিণ দ্বন্দ্ব সংঘাতে জড়িত হয়ে পড়ে। আবার খাজনা আদায় না হওয়ায় শমশের গাজীর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনাও জরুরী হয়ে পড়ে তাদের। ত্রিপুরার রাজার সৈন্যরা এসে খন্ডলের কিল্লার কাছে সমবেত হয়। তারা ঐ এলাকার লোকজনের উপর অত্যাচার চালায় ও তাদের সম্পদ লুটতরাজ করে। লোকেরা ক্ষুব্দ হয়ে শমশের গাজীর সাথে হাত মিলায়। তারা ত্রিপুরার সেনাদের কাছে খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করতে রাজি হয় না। এদিকে ছাদু পাহলোয়ানের নেতৃত্বে শমশের গাজীর বাহিনী মরণপণ আক্রমণ চালায়।তাদের প্রবল আক্রমণে ক্ষুধার্ত ত্রিপুরার সেনারা পালাতে থাকে। রাজার সেনারা পলায়ণ করলে শমশের গাজী রাজধানী অভিমুখে অগ্রসর হয়ে উদয়পুর উপস্থিত হন। এই যুদ্ধে উভয় পক্ষে তিন হাজার সেনা নিহত হয়।
ত্রিপুরার রাজার সহায়তায় মণিপুর রাজার সৈন্যরা এগিয়ে আসলেও তারা শমশের গাজীর বাহিনীর কাছে পরাজিত হয়। রাজা কৃষ্ণমাণিক্য আগরতলা ছেড়ে মণিপুরে আশ্রয় গ্রহণ করেন। শমশের গাজী আগরতলার পর সিলেটের মনু নদীর তীর অবধি তার সীমানা নির্ধারণ করেন।
শমশের গাজী কৌশলে প্রশাসন পরিচালনার উদ্দেশে রাজ পরিবারের লক্ষণ মানিক্যকে রাজার সিংহাসনে বসান। সে সময়ে তিন বছর উজির রামধন, ত্রিপুর সেনাপতি রণমর্দন নারায়ণ, উজির উত্তর সিংহ রাজ্যের প্রকৃত শাসক শমশের গাজীকে সহায়তা করেন। তিনি রাজা উপাধি গ্রহণ করেননি, গাজী উপাধিতেই তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন।
শমশের গাজীর উদার মনোভাব অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি দেশপ্রেম এবং প্রজাদের প্রতি দরদ ও কর্তব্যনিষ্ঠার কারণে ত্রিপুরার রাজার অনেক কর্মকর্তা শমশের গাজীর প্রতি বশ্যতা স্বীকার করে প্রশাসনে সহযোগিতা করেন।তিনি একজন হিন্দু রমণীকে বিবাহ করেছিলেন(নাসির মোহাম্মদ চৌধুরীর সুন্দরী কন্যা দৈয়া বিবির সাথে বিবাহ বা তার কোন খবর আর পাওয়া যায়নি)। প্রশাসনে তিনি অনেক হিন্দু সম্প্রদায়ের লোককে নিয়োগদান করেছিলেন। এদিকে চাচাত ভাই ছাদু পাহলোয়ান উচ্চাকাঙ্খী হয়ে উঠেন। ছাদু পাহলোয়ান শমশের গাজীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। এক সময়ে শমশের গাজীর আদেশে ছাদু পাহলোয়ান নিহত হন।
শমশের গাজী মুর্শিদাবাদের নবাবের অনুমোদনক্রমে বিভিন্ন এলাকার জমিদারি লাভ করেছিলেন। তার জমিদারির আওতায় যে সকল এলাকা এসেছিল সে গুলির মধ্যে ছিল-১. খন্ডল, ২. জগৎপুর, ৩. দক্ষিণ সিক, ৪. আমিরাবাদ, ৫. চৌদ্দগ্রাম অঞ্চল, ৬. জাহাননগর, ৭. মেহেরকুল(কুমিল্লা ও তার আশপাশের অঞ্চল),৮. বগাসাইর, ৯. পাট্টিকারা বা পাইটকারা(চান্দিনা), ১০. বলদাখাল (মুরাদনগর, নবীনগর ও বাঞ্ছারামপুর), ১১. কসবা, ১২. নূরনগর, ১৩. তীষ্ণা(চৌদ্দগ্রাম এলাকার কিছু অংশ), ১৪. গংগামন্ডল, ১৫. বিশালগড়, ১৬. অষ্টজঙ্গল, ১৭. শ্রীহট্ট, ১৮. সরাইল। এছাড়া রওশনাবাদের পরগণা ছাড়াও ভুলুয়া (নোয়াখালী)এবং ইসলামাবাদের নিজামপুর পরগণা(মিরেরশরাই ও ফটিকছড়ি)শমশের গাজীর অধিকারে এসেছিল।
শমশের গাজী এক সময়ে ইসলামাবাদের নিজামপুর পরগণার জমিদারের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। সে কারণে নালিশ যায় মুর্শিদাবাদে। শমশের গাজীকে মুর্শিদাবাদ দরবারে তলব করা হয়। ১৭৫২ সালে শমশের গাজী সোনাপুর থেকে নৌপথে রওয়ানা হন। ঢাকায় পৌঁছে হোসনী দালানে তিনি অবস্থান করেন। সেখান থেকে মুর্শিদাবাদ গমন করেন। পরবর্তীতে সাময়িকভাবে সমস্যার সমাধান করে পুনরায় শাসন করতে থাকেন।
১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধের পর মুর্শিদাবাদের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়। বাংলার এমন দুর্যোগ মুহূর্তে স্থানীয় কুচক্রী মহল, ঢাকার নবাবের প্রতিনিধি, ইংরেজ বেনিয়া ও পরাজিত, বিতাড়িত ত্রিপুরার মহারাজ একত্রিত হয় শমসের গাজীর বিরুদ্ধে। শমসের গাজীর দেশপ্রেম ও সাহসিকতা ইংরেজ এবং এ দেশীয় দালাল কুচক্রীদের ভীত করে তুলেছিল। নবাবের নামে মূলত ইংরেজরাই ষড়যন্ত্র করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত বাহিনী এবং যুবরাজ কৃষ্ণমাণিক্যের নেতৃত্বে পাহাড়ী উপজাতীয় যৌথবাহিনী শমসের গাজীর কেল্লা ও উদয়পুরে আক্রমণ চালিয়ে গাজীকে পরাজিত ও আটক করে। তাদের এতটাই আক্রোশ ছিল যে, ত্রিপুরার মহারাজ হাতিসহ হাজার হাজার সৈন্য পাঠিয়ে চম্পকনগরস্থ শমসের গাজীর প্রাসাদ ধ্বংসস্তুপে পরিণত করে।
চম্পকনগর যুদ্ধে পরাজিত হয়ে বন্দী হলেও আবার পালিয়ে আত্মগোপনে চলে যান বলে প্রচার আছে। যদিও ধারণা করা হয় । ১৭৫৭ সালের কিছু পরে বন্দি অবস্থায় কোন এক সময়ে বীরকেশরী শমশের গাজীকে তথায় হত্যা করা হয়। সেটি পলাশী যুদ্ধের পরের ঘটনা। শেষ হয় ত্রিপুরার ইতিহাসের রহস্য পুরুষ বীরকেশরী শমশের গাজীর চমক লাগানো ঐতিহাসিক এক অনন্য অধ্যায়।
চতুরতা, শঠতা কিংবা বেঈমানীর আশ্রয় নিয়েছেন শমশের গাজী তার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য এটা ঠিক। সেকালের জমিদার, সামন্তরাজা, বাদশাহ, সুলতান অনুরূপ আচরণেই অভ্যস্থ ছিলেন; কেবল শমশের গাজীকে দোষ দিয়ে তো আর লাভ হবে না। কঞ্জুরার জমিদার নাসির মোহাম্মদ চৌধুরীকে উচ্ছেদ করে জমিদারি দখল, ত্রিপুরার মহারাজাকে বিতারণ করে রাজ্য জবর দখল করা হলেও শাসন ব্যবস্থায় সাফল্যের কারণে প্রজাদের সন্তুষ্টি বিধানের উপর গুরুত্ব দিয়ে শমশের গাজী ডাকাত আর অত্যাচারী ইত্যাদি অভিধা ছাড়িয়ে সামন্তবাদীদের বিরুদ্ধে প্রলেতারিয়েতদের নায়ক ও কৃষক-প্রজার নেতা হয়ে উঠেছিলেন নিঃশন্দেহে।
শিক্ষার প্রতি অনুরাগ, এলাকার উন্নয়ন ও জনকল্যাণে অনেক কিল্লা ও দিঘি খননসহ নানা পদক্ষেপ বাস্তবায়ন, প্রজা সাধারণের কল্যাণ চিন্তায় জনহিতকর অনেক পদক্ষেপের কারণে ছাগলনাইয়ার কঞ্জুরা গ্রামের সাধারণ এক শমশের আলী ইতিহাসে আজ শমশের গাজী; ত্রিপুরার রাজা। বাংলার পুবাংশে ত্রিপুরারাজ্য এলাকায় তিনি যেন একজন শেরশাহ। তিনি অন্য সবার চেয়ে আলাদা। একদিকে সাহস অন্যদিকে মহত্বের কারণে শমশের গাজী বিপ্লবীদের মাঝেও যুগ যুগ ধরে প্রেরণার উৎস হয়ে আছেন।
তথ্যসূত্র:
১. উইকিপিডিয়া
২. বিপ্লবী মানুষের কথা
৩. বাংলার বীরেরা
৪. জয়নাল হোসেনের প্রকাশিতব্য একটি গ্রন্থ
ছবি: উইকিপিডিয়া
(*কিছু কিছু জায়গায় শমসের গাজীর মৃত্যু বরণ করেছেন ১৭৫৪ সালে উল্লেখ পেয়েছি। ১৭৫৪ সালের কিছু পূর্বে মুর্শিদাবাদের নবাবের আহবানে তিনি মুর্শিদাবাদ গেলে তাকে বন্দী করা হয়।পরবর্তীতে বন্দী অবস্থার কোন এক সময় তাকে হত্যা করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে)
***ফেনী অনলাইন সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।***
@FeniOnline
Comments