fbpx

বদিউল আলম চৌধুরী – শহীদ বুদ্ধিজীবী, চিকিৎসক ক্যাপ্টেন, ফেনী।

শহীদ বদিউল আলম চৌধুরীর জন্ম ১৯৩৯ সালে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামে। বাবা মৌলভি আহসান উল্যাহ ও মা রইওদুন নেছা। তাঁদের চার ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে বদিউল আলম ছিলেন তৃতীয়।

বদিউল আলম চৌধুরীর স্ত্রী রশিদা আলম চৌধুরী বর্তমানে ফেনী শহরে নিজ বাড়িতে বসবাস করেন। তিনি জানান, ১৯৬৫ সালে বদিউল আলম চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের দুই মেয়ে। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর স্বামীকে কুমিল্লা সেনানিবাসের কার্যালয় থেকে তুলে নেওয়া হয়। তখন বড় মেয়ে দিলরুবা আলম চৌধুরীর বয়স ছিল দুই বছর। ছোট মেয়ে রুবিনা আলম চৌধুরীর জন্ম হয় কুমিল্লা সিএমএইচে। তাঁর বয়স ছিল এক মাস। পাকিস্তানি হানাদার সেনারা তাঁদের সেনানিবাসের বাসার সব জিনিসপত্র লুট ও তছনছ করে দেয়। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে জানান, তাঁর স্বামী শহীদ হলেও তিনি কোনো সরকারি সহায়তা পাননি। অনেক কষ্ট করে দুই মেয়েকে লেখাপড়া করিয়ে বিয়ে দিয়েছেন।

বদিউল আলম চৌধুরী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৫৩ সালে এমবিবিএস পাস করে সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরে যোগ দেন।

একাত্তরের ২৫ মার্চের পর হানাদার পাকিস্তানি সেনারা কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে বাঙালি সৈনিক ও পুলিশ লাইনসে বাঙালি পুলিশ সদস্যদের প্রতি রূঢ় আচরণ শুরু করে। একপর্যায়ে ২৯ মার্চ বাঙালি সৈনিক ও পুলিশের সঙ্গে হানাদারদের যুদ্ধ শুরু হয়। বদিউল আলম আহত বাঙালি সেনা ও পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসাসেবা দেন এবং অনেককে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন। এ কারণে হানাদাররা ৩০ মার্চ সকালে তাঁকে কার্যালয় থেকে আটক করে নিয়ে যায়। ওই দিন বিকেলে সেনানিবাসের ব্রিগেড অফিসের পাশে একটি গর্তের পাশে বদিউল আলম চৌধুরীসহ অন্য বাঙালি সেনা কর্মকর্তাদের দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। মরদেহগুলো সেখানেই মাটিচাপা দেওয়া হয়।

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরের গণকবরগুলো খুঁড়ে বাঙালি সৈনিক, কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষের দেহাবশেষ তুলে আনা হয়। বিভিন্ন নিদর্শন দেখে অনেককে শনাক্ত করা হয়। বদিউল আলমের দেহাবশেষ কুমিল্লা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের সামনে দাফন করা হয়।

বদিউল আলম চৌধুরীর নামে ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর থেকে ঘোপাল পর্যন্ত একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে। সড়কের এক মাথায় একটি তোরণও নির্মাণ করা হয়েছে তাঁর নামে। এ ছাড়া ফেনী শহরে স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতিসৌধে অন্য শহীদদের সঙ্গে তাঁর নামও রয়েছে।

গ্রন্থনা: আবু তাহের, ফেনী
সুত্র : প্রথম আলো

***ফেনী অনলাইন সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও আপডেট জানতে জয়েন করুন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।***

FeniOnline.net Telegram Channel@FeniOnline

Comments

DMCA.com Protection Status
Bidvertiser2074653
error: Something went wrong !!